বাংলাদেশে মন্দির, গির্জা বা প্যাগোডা নির্মাণে কোনো বরাদ্দ নেই
আসিফ হাসান কাজল: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত বলেছেন, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে জেলা ও উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনে ৪৩১ কোটি সাত লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে অথচ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য অনুরূপ মডেল মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনে বাজেটে কোন বরাদ্দ নেই।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বাজেট বৈষম্য প্রসঙ্গে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এবারের অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বাজেট ১ হাজার ৩৩৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। যার মধ্যে উন্নয়ন বাজেট ১০৭৪.৪৭ কোটি টাকা। উন্নয়ন বাজেটে ১০০৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা শুধুমাত্র ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ইসলাম ধর্ম বিষয়ক প্রকল্পে ব্যয় করা হবে।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, সংবিধানের অঙ্গীকার অনুযায়ী ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিককে সমভাবে দেখতে রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এবারের ধর্ম মন্ত্রণালয় বাজেটে সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর মাথাপিছু বরাদ্দ যেখানে ১১ থেকে ১২ টাকা, সেখানে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠির মাথাপিছু বরাদ্দ মাত্র ৩ টাকা।
এবারের অর্থ বছরে মসজিদভিত্তিক শিশু শিক্ষা ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের জন্য ৩৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ৬৫ কোটি টাকা সংখ্যালঘুদের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে। মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে ৬২ কোটি টাকা ও প্যাগোডাভিত্তিক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় ৩ কোটি টাকা।
অনুন্নয়ন বাজেটে ২৬৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার মধ্যে সংখ্যালঘুদের জন্য মাত্র ২ ভাগ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৭১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও এবারের বাজেটে টাকার অঙ্ক মাত্র ৭০.৫৪ কোটি টাকা। আনুপাতিক হার গতবার ১১ ভাগ থাকলেও এবার সংখ্যালঘুদের জন্য রয়েছে মাত্র ৫ ভাগ। মুসলিমদের জন্য হজ বিষয়কের জন্য ৬৯.৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের জন্য তীর্থ ভ্রমনের জন্য কোন বরাদ্দ নেই। এবারের বাজেটে বায়তুল মোকাররম মসজিদের জন্য ১.৪৬ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানদের কেন্দ্রীয় উপাসনালয়ে কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি।
বিশেষ কার্যক্রমে চালানোর জন্য ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমির জন্য ২৩ কোটি ২ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে কিন্তু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টানদের জন্য এ ধরণের কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি।
এসময় বক্তারা ৬ টি দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা মাথাপিছু বরাদ্দের অবসান চাই। আমাদের দেশে ভারতের অনুরুপ সংখ্যালঘু মন্ত্রনালয় হোক, আমরা চাই ভারতের অনুরুপ সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। বাংলাদেশ বুদ্দিস ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় প্রমুখ।